কুরআনের শব্দগুলো কেমন ?



গঠনগত ভাবে আরবি শব্দ সাধারণত ১-বর্ণের, ২-বর্ণের, ৩-বর্ণের ও কখনও কখনও ৪-বর্ণের হয় । তবে বেশির ভাগ আরবি শব্দই ৩-বর্ণের । আবার, ২- বা ৩-বর্ণের শব্দের সাথে এক বা একাধিক ১-বর্ণের শব্দ যুক্ত হয়ে বহু বর্ণের শব্দ তৈরি করে । এই অধ্যায়ে আমরা দেখবো কুরআনের শব্দগুলো দেখতে কেমন । শব্দগুলোর বিভিন্ন রূপের কারণে অর্থের কেমন পরিবর্তন হয় । এই শব্দগুলোর সাধারণ কিছু নিয়ম জানবো । যদিও সব নিয়মেরই কিছু ব্যতিক্রম আছে তবে সেটা এখন আমাদের মাথায় না আনলেও হবে ।

৩-বর্ণের শব্দ

# ৩-বর্ণের শব্দগুলো সাধারণত কর্তৃ/নামবাচক (noun) এবং ক্রিয়া বাচক (verb) হয় ।

# বর্ণের সাথে বিভিন্ন স্বরকার (vowel marking) [ফাত্‌হা/যবর=আ-কার, কাস্‌রা/যের=ই-কার, দম্মা/পেশ=উ-কার] বসে noun/verb নির্দেশ করে ।

# সাধারণত

         ক) আ-কার থাকলে active voice , noun হয় (কা তি ব = লেখক)
         খ) ই-কার থাকলে বস্তু, physical concept বুঝায় (কি তা ব = বই / লিখিত কিছু)  
         গ) উ-কার থাকলে passive voice (কু তি বা = লিখিত হয়) ।

৩-বর্ণের শব্দ

চলুন আল-কুরআন থেকে কিছু উদাহরণ দেখি ।

২-বর্ণের শব্দ

যদিও আরবি বেশির ভাগ শব্দই এসেছে ৩-বর্ণের শব্দমূল থেকে তবে কিছু শব্দে ২টি বর্ণ প্রাধান্য পায় । এই শব্দগুলোকে আমরা ২-বর্ণের শব্দ বলছি । যেমন, আগের অধ্যায়ে আমরা ২টি ক্রিয়া বাচক শব্দ দেখেছিলাম; ক্ব-লা (=বলা), কা-না (=হওয়া) যেখানে ২টি বর্ণ যথাক্রমে ক্বফ-লাম ও কাফ-নুন প্রাধান্য পায় । নিচে ১টি ২-বর্ণের শব্দের (ক্ব-লা) বিভিন্ন রূপ দেয়া হলো । লক্ষ্য করুন, ৩-বর্ণের সাথে ২-বর্ণের নিয়মের কিছু ব্যতিক্রম আছে । শব্দের এই রূপগুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।

২-বর্ণের শব্দ

চলুন আল-কুরআন থেকে কিছু উদাহরণ দেখি । একই শব্দমূল (قول) থেকে আরও দুটি শব্দ (ক্বাউলু, ক্ব-ইলুন) এই ছকে দেয়া হলো ।

১-বর্ণের শব্দ

১-বর্ণের শব্দগুলো কখনো স্বাধীন ভাবে ব্যবহার হয় আবার কখনো শব্দের আগে বসে, কখনো মধ্যে বা কখনো শেষে বসে মূল শব্দের বিভিন্ন অর্থ তৈরী করে । এগুলোর ভিন্ন ভিন্ন রূপ ও ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন লিঙ্গ, ক্রিয়ার কাল, সর্বনাম প্রকাশ করে । একটু মনযোগ দিয়ে শব্দের মধ্যে এগুলোর অবস্থান সনাক্ত করতে পারলে খুব সহজে শব্দের অর্থ করা যাবে ইনশা-আল্লাহ । নিচের ছকে বিভিন্ন অবস্থানের জন্য এগুলোর অর্থ এবং প্রত্যেকটির উদাহরণ দেয়া হল ।










বহু-বর্ণের শব্দ

যেমনটা আগে বলা হয়েছে যে ২- বা ৩-বর্ণের শব্দের সাথে এক বা একাধিক ১-বর্ণের শব্দ যুক্ত হয়ে বহু বর্ণের শব্দ তৈরি করে । নিচে এমন একটি বহু বর্ণের শব্দ ভেঙ্গে দেখানো হলো । এখানে শব্দমূল ‘ইল্‌ম’ (=জানা) এর আগে ৩টি ১-বর্ণের শব্দ (ফা, সা, তা) এবং শেষে ওয়াও নুন যুক্ত হয়েছে যেটা বহুবচন নির্দেশ করে ।

নিচের ছকে ইল্‌ম (আ'ইন, লাম, মীম) থেকে আগত ক্রিয়া বাচক শব্দ আ’লিমা (=জানা) এর সাথে বিভিন্ন বর্ণ যুক্ত হয়ে আল-কুরআনের যে শব্দগুলো তৈরি হয়েছে তা (সূরা, আয়াত নং সহ) দেয়া হল । উপরের ১-বর্ণের শব্দের তালিকাটির সাহায্য নিয়ে খুব সহজেই আপনি এই শব্দগুলোর অর্থ করতে পারবেন ইনশা-আল্লাহ ।

নিচের ছকে শব্দমূল ইল্‌ম থেকে আগত আল-কুরআনের শব্দগুলো উদাহরণসহ দেয়া হল ।

******************************************************************************

আগের অধ্যায় আগের অধ্যায় ৩। বিসমিল্লাহ্‌ বলে শুরু করি

পরের অধ্যায় ৫। আরবি নাকি বাংলা শব্দ ?

******************************************************************************

সর্বশেষ পরিমার্জন ২৪-০৪-২০২০





No comments:

Post a Comment