১১ । হুদ
মাক্কী সূরা । আয়াত সংখ্যাঃ ১২৩ । পারাঃ ২১ ।
নামকরণঃ
সূরা হুদ-এর নামকরণের সার্থকতা মূলত নবী হুদ (আ.)-এর নামের সাথে সংশ্লিষ্ট, যিনি আদ জাতির প্রতি আল্লাহর প্রেরিত একজন নবী ছিলেন। এই সূরায় হুদ (আ.)-এর কাহিনি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে, যেখানে তিনি তাঁর জাতিকে একত্ববাদ ও সৎকর্মের পথে আহ্বান জানান। তবে, তারা অবাধ্যতা ও অহংকারের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এছাড়া, এই সূরায় কেবল হুদ (আ.)-এর ঘটনাই নয়, বরং অন্যান্য নবীদের (যেমন নূহ, সালেহ, ইবরাহিম, লূত ও শু‘আইব (আ.)) দাওয়াত ও তাদের সম্প্রদায়ের পরিণতির বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু হুদ (আ.)-এর দাওয়াত এবং আদ জাতির প্রতি আল্লাহর শাস্তির বিষয়টি এখানে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। তাই এই সূরার নাম "হুদ" রাখা হয়েছে, যা শুধু নবী হুদ (আ.)-এর প্রসঙ্গ নয়, বরং সার্বিকভাবে নবীদের আহ্বান, সত্য-মিথ্যার সংঘর্ষ এবং অবিশ্বাসীদের পরিণতির প্রতিফলন করে।
আলোচ্য বিষয়ঃ
সূরা হুদ, কুরআনের
১১তম সূরা, ঈমান, ধৈর্য ও আল্লাহর ন্যায়ের
উপর গুরুত্বারোপ করে। এই সূরাটি একত্ববাদকে শক্তিশালীভাবে তুলে ধরে, মানুষকে শুধুমাত্র আল্লাহর
ইবাদত করতে এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে আহ্বান জানায়, যাতে তারা দুনিয়ায় কল্যাণ
লাভ করে এবং পরকালে মুক্তি পায়। এতে অতীতের বিভিন্ন নবীর—নূহ (আ.), হুদ (আ.), সালেহ (আ.), ইবরাহিম (আ.), লূত (আ.) এবং শু‘আইব
(আ.)—কাহিনি
বর্ণিত হয়েছে, যেখানে
দেখানো হয়েছে কিভাবে তারা তাদের জাতিকে সত্যের পথে ডাকতেন এবং কীভাবে অবিশ্বাস ও অবাধ্যতার
কারণে তাদের সম্প্রদায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এই সূরা মানুষের জন্য সতর্কবার্তা দেয় যে যারা
সত্য প্রত্যাখ্যান করে, তাদের জন্য কঠোর শাস্তি নির্ধারিত, আর যারা ঈমানদার ও সৎকর্মশীল, তারা আল্লাহর অনুগ্রহ
লাভ করবে। এটি দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী প্রকৃতি, পুনরুত্থানের নিশ্চিত সত্যতা এবং
আখিরাতে মানুষের চূড়ান্ত প্রতিদান বা শাস্তির বিষয়েও আলোকপাত করে। অতীত জাতিদের ধ্বংসের
ঘটনাবলী দ্বারা এই সূরা মানুষকে সতর্ক করে, একই সঙ্গে যারা সত্য ও ন্যায়ের
পথে অবিচল থাকে তাদের জন্য আশা ও সান্ত্বনার বাণী দেয়।